কাভার্ড ভ্যান চালকের আড়ালে গার্মেন্টসের কাপড় চুরি

কাভার্ড ভ্যান চালকের আড়ালে গার্মেন্টসের কাপড় চুরি

আসাদুজ্জামান মোল্লা আসাদ পেশায় একজন কাভার্ড ভ্যান চালক। তবে সে শুধু গার্মেন্টসের কাপড় পরিবহনের কাভার্ড ভ্যান চালকের চাকরি নিত। আর এই চাকরির আড়ালে মূল উদ্দেশ্য ছিল গার্মেন্টসের কাপড় চুরি করা। একা কাপড় চুরি করা সম্ভব নয় বলে একটি চক্রও বানিয়েছে আসাদ।

আসাদ ও তার চক্রটি সবসময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকত কখন কাপড় কাভার্ড ভ্যানে করে নিয়ে কারখানা থেকে বের হবে। পরে সুবিধামতো সময়ে সেসব কাপড় গন্তব্যে না পৌঁছে চুরি করে স্টক করে তারা। এরপর চোরাই মার্কেটে ক্রেতা ঠিক করে বিক্রি করে দেওয়া হতো সেসব কাপড়।

এমন নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর উত্তরা ও গাজীপুরের কাপাসিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে কাভার্ড ভ্যান চালক আসাদসহ তিন জনকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। এ সময় তাদের কাছ থেকে নোমান গ্রুপের চুরি হওয়া একটি কাভার্ড ভ্যানসহ আট লাখ টাকা মূল্যের কাপড় উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার বাকি দুইজন হলেন- আল আমিন ওরফে সরোয়ার ও আবেদ আলী।

রোববার (০১ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ।

হারুন অর রশীদ বলেন, গার্মেন্টসের পণ্য চুরি যাওয়ার ঘটনায় সম্প্রতি একটি কমিটি হয়, যেখানে ডিবি পুলিশও রয়েছে। এরপর এসব ঘটনা তদন্তের ধারাবাহিকতায় এই চুরি চক্রকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। নোমান গ্রুপের কাপড় চুরি যাওয়ার ঘটনার দুই দিনের মধ্যেই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরার আব্দুল্লাহপুর ধৌর ব্রিজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে কাভার্ড ভ্যানসহ চালক আসাদুজ্জামান মোল্লা আসাদকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পরে গাজীপুরের কাপাসিয়া এলাকা থেকে আল আমিনের গোডাউন থেকে চুরি যাওয়া ৮ হাজার ৪৬০ মিটার কাপড় জব্দসহ বাকি দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, আসাদ কাভার্ড ভ্যান চালক হিসেবে বিভিন্ন গার্মেন্টসে চাকরি নেয়। গার্মেন্টসের মালামাল পরিবহনের সময় সুবিধামতো সময়ে কাভার্ড ভ্যানসহ চুরি করে নিখোঁজ হয়ে যায় সে। পরে আবার অন্য গার্মেন্টসে চাকরি নিয়ে নতুন করে চুরির পরিকল্পনা করে। আসাদ চুরি করে কাভার্ড ভ্যানসহ কাপড়গুলো আল আমিনের গোডাউনে রাখে। পরে আবেদের মাধ্যমে চোরাই বাজারে সেসব কাপড় বিক্রি করা হত। আসাদের বিরুদ্ধে এর আগেও গাজীপুরের কালিগঞ্জ ও টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার বলেন, গার্মেন্টস মালিকদের এ বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে। যাকে চালক হিসেবে চাকরি দেওয়া হয়, তার পরিচয়পত্র, ঠিকানা ও স্বজনদের বিস্তারিত তথ্য রাখা উচিত। যাতে এমন কোনো ঘটনা ঘটলে দ্রুত চালককে শনাক্ত করা যায়। এছাড়া, পণ্য পরিবহনের সময় কাভার্ডভ্যান ট্র্যাকিংয়ের জন্য জিপিএস ডিভাইসও বসানো যায়। এছাড়া যারা কাপড় কেনেন তাদেরও খেয়াল রাখা উচিত এসব চোরাই কি না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই চক্রের সঙ্গে আরও কয়েক জনের নাম পাওয়া গেছে। তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন